বিশেষ প্রতিনিধি ॥ ভোলার চরফ্যাশন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) অফিসে তিনদিন ধরে এক নছিমনচালককে আটকে রাখা হয়েছে। দুর্ঘটনায় গাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় ক্ষতিপূরণ আদায়ের জন্য তাকে আটকে রেখেছেন বলে স্বীকার করেছেন ইউএনও রুহুল আমিন। ইউএনও রুহুল আমিন বলেন, তিনদিন নয়; আড়াই দিন আটকে রেখেছি। এছাড়া আমার কিছুই করার ছিল না। তার কারণে দুর্ঘটনায় আমার গাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত গাড়িটি মেরামত করবে কে? একজন ইউএনও কত টাকা বেতন পায়, বলুন? রুহুল আমিন বলেন, আমি চাইলে ওই দিন নছিমনচালককে কারাদণ্ড দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করতে পারতাম। কিন্তু মানবিক দিক বিবেচনা করে অফিসে এনে আটকে রেখেছি। নছিমনচালক কত টাকার মালিক এবং তিনি কীভাবে ক্ষতিপূরণ দেবেন জানতে চাইলে ইউএনও বলেন, তাহলে আমি কেন ক্ষতিপূরণ দেব? স্থানীয় সূত্র জানায়, সোমবার (০৩ মে) ভোলা সদর উপজেলা থেকে চরফ্যাশনে যাচ্ছিলেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রুহুল আমিন। সদর উপজেলার বাংলাবাজার এলাকায় ইউএনওর গাড়ির সঙ্গে সদর উপজেলার বাসিন্দা আরিফের নছিমনের ধাক্কা লাগে। এতে দুটি গাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। দুর্ঘটনার পর নছিমনচালককে আটক করেন ইউএনও। ইউএনও রুহুল আমিন বলেন, নছিমনচালককে আটক করে চরফ্যাশন থানায় সোপর্দ করা হয়। তারপর বিবেচনা করে দেখলাম, তাতে তো ক্ষতিপূরণ উঠবে না। এরপর আমার অফিসে নিয়ে আসি। এখানে আটকে রেখে ক্ষতিপূরণ আদায় করতে চাই। আমি তার মা-বাবাকে খবর দেওয়ার জন্য বলেছি। কিন্তু তার মা-বাবা আসেনি। এখন আমি কি করব? আমি চেয়েছিলাম; যে ক্ষতিপূরণ নিয়ে তার মা-বাবা এলে তাকে ছেড়ে দেব। কিন্তু তার আগেই সাংবাদিকরা এসে গোলমাল পাকিয়ে ফেলেছেন। ওই নছিমন চালক একটা নেশাখোর। এজন্য তার মা-বাবা নিতে আসেনি। তিনদিন ধরে সে আমার অফিসে রয়েছে। ক্ষতিপূরণ পেলেই তাকে ছাড়ব। বৃহস্পতিবার (০৬ মে) বিকেলে নছিমনচালক মো. আরিফ বলেন, আমার কিছু নাই; যা বিক্রি করে ইউএনওকে ক্ষতিপূরণ দেব। তারপরও অনেক কষ্টে ২০ হাজার টাকা জোগাড় করে দিতে চেয়েছি। কিন্তু তিনি রাজি হননি। তিনি বলেছেন গাড়ির ক্ষতি হয়েছে ৩-৪ লাখ টাকা। এক লাখ টাকা দিতে হবে। ভোলার জেলা প্রশাসক (ডিসি) তৌফিক-ই-লাহী চৌধুরীর কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
Leave a Reply